শিরোনাম:
ঠাকুরগাঁও, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ৩১ আশ্বিন ১৪৩১

Deshayan
শুক্রবার ● ৮ মে ২০২০
প্রচ্ছদ » আন্তর্জাতিক » বিশেষ সাক্ষাতকার : কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস: বিশ্ব ও বাংলাদেশ
প্রচ্ছদ » আন্তর্জাতিক » বিশেষ সাক্ষাতকার : কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস: বিশ্ব ও বাংলাদেশ
৮৭৩ বার পঠিত
শুক্রবার ● ৮ মে ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বিশেষ সাক্ষাতকার : কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস: বিশ্ব ও বাংলাদেশ

---ড. মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ ঠাকুরগাঁওয়ের কৃতী সন্তান। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক। প্রেষণে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। সংক্রামক অনুজীব নিয়ে গবেষণা তাঁর মূল ক্ষেত্র। কোভিড-১৯ যা করোনা নামে সমধিক পরিচিত, এ অনুজীব নিয়ে তিনি বর্তমানে গবেষণা করছেন। এ ভাইরাসের উত্থান, বিশ্বব্যাপী এর বিস্তার এবং মানুষ থেকে মানুষে এ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার কৌশল, সংকটজনিত প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। এনিয়ে সম্প্রতি আলাপ হয়েছে দেশায়ন ডটকমের সম্পাদক গোলাম সারোয়ার সম্রাট এর সঙ্গে। সেটির দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশিত হলো।

গোলাম সারোয়ার সম্রাট: করোনার কমিউনিটি ট্রান্সমিশন সম্পর্কে আমরা বেশ চিন্তিত। এ নিয়ে যদি কিছু বলেন ।

ড. মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ:
আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সময় প্রেস ব্রিফিং এ কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের ভয়াবহতা তুলে ধরে দেশবাসীকে সতর্ক করেছিলেন। বলতে দ্বিধা নেই আমরা সেই কথা কানে নেইনি এবং খুব একটা সতর্কও হয়নি। বাংলাদশেরে মানুষরা লকডাউন মানছে না, ঘরে থাকছে না । এর ফল ভয়াবহ হতে পারে । সাধারণ মত, পেটের তাগদি ছাড়াও র্দীঘ সময় ধরে লকডাউনে থাকা জনতি অবসাদ, মানসিক শৈথিল্য ও উদাসীন মনোভাব এর কারণ ফলে যা সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল, তাই সংঘটিত হয়েছে। এখন আর পেছনে না তাকিয়ে সামনে তাকাতে হবে। । আমাদরে এজন্য সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়ে কাজ করতে হবে ।
এখন বাংলাদশেে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের হার কমিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। যেসব দেশে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়েছে, সেসব দেশের ট্রান্সমিশন ডাইনামিক্সের করোনা সঞ্চালন পর্যবেক্ষণ এক্ষেত্রে ফলদায়ক হতে পারে। এটি দেশের জন্য সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার এবং মহামারি নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর হবে বলে মনে করি। উপযুক্ত মডেলিং দ্বারা কোভিড-১৯ এর পূর্বাভাসও জানতে হবে। সংক্রামক সূচকের বৃদ্ধি-কমানো এবং স্থিতিশীল মাত্রা পেতে সর্বাধিক অনুমোদিত দৈনিক বৃদ্ধির হার নির্ধারণ করতে হবে। আরও মনোযোগ দিতে হবে যারা আপাতদৃষ্টে সুস্থ কিন্তু ইতোমধ্যে ভেতরে ভেতরে আক্রান্ত, তাদের শনাক্ত করা।
অপ্রকাশিত উপসর্গের করোনা রোগীদের দ্বারা কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বেশি হচ্ছে। এটি এখন উদ্বেগের কারণ। করোনা রোগীর যে ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে, তার পেছনে এ রোগ নিয়ে ঘুরে বেড়ানো লোকজনই দায়ী। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত হটস্পটগুলোর জনসমাগত ভেঙ্গে দিতে হবে। শুধু রাজধানী ঢাকাতে না, গুরুতর রোগীদের জন্য অক্সিজেন থেরাপি, মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন এবং আইসিইউ সারাদেশে পর্যাপ্ত পরিমানে রাখা উচিত। সংক্রমণের গ্রাফ আনুভূমিক করার এই সকল চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এরফলে আমরা সময় পাব সারা দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আরও সম্প্রসারিত করার।

গোলাম সারোয়ার সম্রাট: কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা কমানো সম্ভব। এই পরিকল্পনা কেমন হতে পারে, সে সম্পর্কে বলবেন?

ড. মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ:
প্রতিদিন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমিয়ে আনার বিকল্প নেই। আমরা লক্ষ করছি যে, আক্রান্তের সংখ্যার সূচক উর্ধ্বগতিতে রয়েছে। বর্তমান এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনগুলো আরও খারাপ ফল বয়ে আনবে। এটা জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের। কোভিড-১৯ সনাক্তকরণে অবিরাম পরীক্ষা চালাতে হবে। পরীক্ষা যতো বেশি হবে, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ততো কম হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ কথা বলছে। নোবলে জয়ী পল রোমার থকেে শুরু করে প্রখ্যাতদরে ৯০ শতাংশ র্অথনীতবিদি মনে করনে, যতো টস্টে ততো রস্টে র্অথাৎ যত বশেি মানুষরে ভাইরাস পরীক্ষা করা হবে, ততই মংগল। আসলে করোনার পরীক্ষা বৃদ্ধির বিকল্প নেই।
গত ৩০ মার্চ পর্যন্ত উহান থেকে সৃষ্ট ভাইরাসটি এক হাজার ৪০২টি মিউটেশন হয়েছে। যার ফলে এই ভাইরাসের প্রোটিনের মধ্যে ৭২২টি পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনের কোন কোন অংশ ভাইরাসটিকে আরও বেশি সংক্রামক এবং ক্ষতিকর করে তুলতে পারে। এত বেশি সংখ্যক মিউটেশনের ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রকৃত চরিত্র সম্পর্কে আগাম মন্তব্য কাজে আসছে না।

সম্প্রতি পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, নোভেল করোনা ভাইরাসের তিনটি প্রধান ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে- এ, বি, সি। গবেষকগণ অ্যামিনো অ্যাসিডের পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে এই দাবি করেছেন। টাইপ বি পাওয়া যাচ্ছে পূর্ব-এশিয়ার দেশগুলোতে। এ আর সি মূলত পূর্ব-এশিয়ার বাইরে, ইউরোপে আর আমেরিকাতে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে কোন ধরনের সার্স-কোভ-২ টাইপ ভাইরাস আছে বা কোন ধরনের মিউটেশনের মাধ্যমে এটি পরিবর্তিত হচ্ছে, তা জানা যায়নি। এখন এটি জানা জরুরি হয়ে পড়ছে। কারণ এটি আমাদের জনগোষ্ঠির জন্য টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। ভবিষ্যতে হয়তো অন্য দেশে থেকে আমদানি করা ভ্যাকসিন এক্ষেত্রে কাজ নাও করতে পারে। বাংলাদেশেও এ নিয়ে গবেষণা শুরু করতে হবে। আমি মনে করি এজন্য বাংলাদেশেই এর ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন।
সকলেই খুশি হবেন যে, বাংলাদেশে এ ধরনের ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করার মতো গবেষক ও বিজ্ঞানী আছেন। সমস্যা অন্য জায়গায়। সেটা হলো এ গবেষণা চালিয়ে নেওয়ার মত মানসম্পন্ন গবেষণাগার বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। গবেষণা বিশেষত বায়োলজিক্যাল গবেষণার ওপর জোর দিয়েই করোনা পরবর্তী অবস্থা মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের এখনই রূপরেখা তৈরি করতে হবে।

গোলাম সারোয়ার সম্রাট: করোনা থকেে বাঁচতে বিশেষায়িত টাস্কফোর্স গঠন কি উপায়ে করা সম্ভব ?
ড. মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ:
আমরা লক্ষ্য করছি যে, বাংলাদেশ সরকার করোনার মহামারী বিস্তার রোধে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ওইসব পদক্ষেপে উপর্যুক্ত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে যেগুলো অনুপস্থিত সে বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে বড় ধরনের সাফল্য আসতে পারে। এজন্য আমরা বিশেষায়িত এবং দক্ষ কর্মীদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা যেতে পারে।
চিকিৎসকদের পাশাপাশি অণুজীববিজ্ঞানী, ভাইরোলজিস্ট, রোগতত্ত্ববিদসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের গবেষকদের এই করোনা মোকাবিলায় সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। করোনা জয় করার শক্তি আমাদের হাতেই। এখন কমিউনিটি ট্রান্সমিশন কমানোর লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা, স্ববিচ্ছিন্নতা, সামাজিক দূরত্ব এবং প্রয়োজনে কার্যকর লক-ডাউন নিয়ে আরও ভাবতে হবে। আর এই ভাবনা এবং বাস্তবায়ন ততোদিন অব্যাহত রাখতে হবে, যতো দিন পর্যন্ত এর কার্যকর ঔষধ বা ভ্যাকসিন আবিস্কার না হচ্ছে।

গোলাম সারোয়ার সম্রাট: সংক্ষপেে বলুন আমাদের মূল পদ্ধতি কি হওয়া উচিৎ ?

ড. মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ:
সংক্ষেপে বলা বেশ। আগামীতে সময় পেলে আরো বিস্তারিত বলা সম্ভব। তবে আগেই বলেছি এজন্য সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়ে কাজ করতে হবে । ভিয়েতনামকে এ ক্ষেত্রে উদাহরণ যা চায়নার পাশে হলেও সমন্বতি ও সৃজনশীল পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে করোনা ভাইরাস কারণে মৃত্যু সংখ্যা শূন্যতে এনেছে । বিশ্ব ব্যাংক ও অন্যান্য অর্থনৈতিক সংস্থার মতে বিশ্বে পঞ্চাশ কোটি মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে ভয়াবহতার মধ্যে পরবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে । তাছাড়া পেটের তাগদি ছাড়াও র্দীঘ সময় ধরে লকডাউনে থাকা জনিত অবসাদ, মানসিক শিথিলতা ও উদাসীন মনোভাব এর কারণ । তাই লকডাউনই একমাত্র সমাধান যে তা হলফ করে বলবো না। এর জন্য আমাদরে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা, স্ববিচ্ছিন্নতা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা অবশ্য র্কতব্য।

(সমাপ্ত)





আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

ফুলবাড়িতে বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক : সীমান্ত হত্যার কড়া প্রতিবাদ ফুলবাড়িতে বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক : সীমান্ত হত্যার কড়া প্রতিবাদ
মাদকদ্রব্যের পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপনে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী মাদকদ্রব্যের পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপনে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী
ঠাকুরগাওয়ে নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস পালিত ঠাকুরগাওয়ে নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস পালিত
ঠাকুরগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস পালিত ঠাকুরগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস পালিত
আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে র‌্যালি ও আলোচনা সভা আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে র‌্যালি ও আলোচনা সভা
টাঙ্গন নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্রের সভা টাঙ্গন নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্রের সভা
ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনকে সংবর্ধনা ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনকে সংবর্ধনা
ঠাকুরগাঁওয়ে ছাত্রলীগ নেতার উদ্যোগে ছিন্নমূল শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ ঠাকুরগাঁওয়ে ছাত্রলীগ নেতার উদ্যোগে ছিন্নমূল শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ
ঠাকুরগাঁওয়ে লকডাউনের চতুর্থ দিনে ইউএনও-পুলিশের অভিযান : অর্থদন্ড ঠাকুরগাঁওয়ে লকডাউনের চতুর্থ দিনে ইউএনও-পুলিশের অভিযান : অর্থদন্ড
ঠাকুরগাঁওয়ে লকডাউনের তৃতীয় দিনে আইন-শৃঙ্খলা : জেল-অর্থদন্ড ঠাকুরগাঁওয়ে লকডাউনের তৃতীয় দিনে আইন-শৃঙ্খলা : জেল-অর্থদন্ড

আর্কাইভ