শিরোনাম:
ঠাকুরগাঁও, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ৩১ আশ্বিন ১৪৩১

Deshayan
বৃহস্পতিবার ● ৭ মার্চ ২০১৯
প্রচ্ছদ » আন্তর্জাতিক » নারী দিবস উপলক্ষে : আমাদের নারী সমাজ-আগামীর ভাবনা : আফরোজা রিকা
প্রচ্ছদ » আন্তর্জাতিক » নারী দিবস উপলক্ষে : আমাদের নারী সমাজ-আগামীর ভাবনা : আফরোজা রিকা
৭৪৪ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ৭ মার্চ ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

নারী দিবস উপলক্ষে : আমাদের নারী সমাজ-আগামীর ভাবনা : আফরোজা রিকা

---একবিংশ শতাব্দীতেও আমাদের সমাজে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য মূলক চিন্তা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ অসম চিন্তাকে শুধু কি পুরুষ একাই করছে। নারী কি নিজে সেই অসম চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে ? প্রাচীন পন্থী ধ্যান ধারণার কারণে, এখনো সমাজে বহু নারী অজান্তেই পুরুষতন্ত্রের চর্চা করে যাচ্ছে। নিজের কর্মক্ষমতা, শক্তি, মেধা সম্পর্কে এতটা হীনমন্যতায় ভ‚গছে যে সে নিজেকে দুর্বল,অবলা, পুরুষের উপর নির্ভরশীল পরজীবী বলে ভাবছে। নারী তার দৈহিক ও মানসিক অস্তিত্বেও ক্ষেত্রে সৎ,স্বাধীন,সক্রিয় ও মুক্ত চিন্তা সম্পর্কে অসচেতন। যারা সচেতন হতে চাইছে ,তাদেরকে বিভ্রান্ত করছে কিছু নারীবাদের ভ্রান্ত চর্চা।

যা মানুষকে নিজের স্বার্থের জন্য, নিজেকে শক্তিশালী করার জন্য, আত্মপ্রচারের জন্য কিন্তু পরার্থপরতার জন্য নয়। এই ধরণের স্বার্থপর নারীবাদীতা থেকে কোন ভাবে নারী ক‚লের, মানব জাতির কল্যাণ আশা করা যায় না। সেটা কাম্য নয় মোটেও। স্বার্থপরতা নয়,প্রয়োজন নারী-পুরুষের সমতা চিন্তার চাষ। বাংলাদেশের মত একটি রাষ্ট্র নারী পুরুষের দুটি হাতের পরিশ্রমের ওপর নির্ভরশীল, প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নয়। নারীর পরিশ্রমের অবমূল্যায়ন একটি প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার সমাধান নারীকে নিজেই করতে হবে। তার শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত  করা,অধিকার সচেতন বোধ ও যোগ্যতা তৈরি যখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বর্তমান সমাজে তখনি মুক্তিযুদ্ধের ৪৮ বছর পর দেশটিতে প্রশ্ন ওঠে, নারী পড়বে শুধুমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত।এ যেন দিশেহারা স্বদেশ। আশ্চর্য হতে হয় আমরা কী এগোচ্ছি নাকি পিছিয়ে পড়ছি? শুধুমাত্র ইট পাথরের গাঁথুনি দিয়ে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত কী করে হয়? প্রশ্ন জাতির কাছে।

অথচ আধুনিক রাষ্ট্রের আদর্শ হওয়া উচিৎ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা। তবে অনেক ন্রীই শিক্ষিত হলেও শিল্প-সাহিত্য চর্চাও মাধ্যমে নিজ অধিকার বিষয়ে সঠিক পরিসরে পৌঁছতে পারে নি। বস্তু পৃথিবীকে রূপান্তর ও পুনরায় সৃষ্টি করাই মানুষের সভ্যতার সংস্কৃতির অন্যতম ধর্ম। এবং এই সৃষ্টিশীলতার অন্যতম প্রকাশ মাধ্যম শিল্প-সাহিত্য। প্রশ্ন হচ্ছে শিল্প-সাহিত্য চর্চার অধিকার নারীদের কতটুকু ছিল বা আছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধেও পৃথিবীর বিভিন্ন সমাজে এই বিষয়ে নানাবিধ বাধা বিপত্তি, বিধি নিষেধের কমতি ছিল না। এর পরে নারীর প্রতি সকল প্রকার লিঙ্গীয় বৈষম্যেও বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে ওঠে। এই আন্দোলন শুরু হয় নারীর প্রতি প্রথাগত পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকে চ্যালেঞ্জ করে। ফলে নারী আন্দোলন জেন্ডার সমতার লক্ষ্যে বৈশ্বিক এবং জাতীয় ভাবে কাজ শুরু করে, শিল্প সাহিত্যে বিল্পবের মাধ্যমে।

সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৭২ সালে Mary Wollstonecraft এর ÔVindication of the Rights of Woman, আমেরিকায় ১৮৪৮ সালে সেনেকা ফলস্, কনভেনশন এবং ১৮৯০ সালে নারী ভোটাধিকার আন্দোলন; ১৯৪৯ সালে Simone de Beauvoir Gi `Second Sex’ এবং ১৯৬৩ সালে বেটি ফ্রেইডেন-এর `The Feminine Mystique’ বইগুলো নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। উপমহাদেশে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আঠারো শতকে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখেন পুরুষ সমাজ। এই অগ্রণী ভ‚মিকার নেতৃত্বে ছিলেন রাজা রামমোহন রায় এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। পরবর্তীকালে ভারতবর্ষ ও বাংলায় নারী আন্দোলনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। তাঁর সাহিত্য সৃষ্টির মাধ্যমে নারী আন্দোলনে জোড়ালো বক্তব্য এবং দর্শন প্রকাশ করেছেন। যা আজও আমাদের নারী আন্দোলনের দিক নির্দেশক।

একজন নারী বা পুরুষ আসলে একজন ব্যক্তি মানুষ। সে পরিবারের, সমাজের, রাষ্ট্রের একজন সদস্য। পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রের বিবেচনায় সে একক সত্তা। শুধু একটি ইউনিট নয়, সে একটি লিগ্যাল এনটিটি অবশ্যই। সেই লিগ্যাল এনটিটি এবং একক সত্তার বিকাশে নারী-পুরুষ বৈষম্যের চিন্তা আধুনিক যুগে মোটেও কাম্য নয় ।

নারী মূল্যবোধহীন সমাজে অপসংস্কৃতি চর্চার কারণে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে পড়েছে। নারী মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন পারিবারিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের। নারীর সমঅধিকারের ধারণাকে প্রচার এবং সাহিত্য-লেখালেখিতে সেই বিষয়টিকে নিয়ে অনুশীলন করা যেমন দরকার তেমনি মাঠপর্যায়ে নারী অধিকার সংগ্রামটি চালিয়ে যেতে হবে। এবং সেটি হওয়া চাই ইতিবাচক।

এভাবেই সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী, কুসংকারাচ্ছন্নতা, নারীর প্রতি সহিংসতা সম্পর্কে জোরালো প্রতিবাদ সৃষ্টি সম্ভব। নারী ও সচেতনতা নিয়ে ইতিবাচক ধারণায় কাজ করার লক্ষ্যে এই পথ চলা শুরু করতে হবে। নারী অধিকার এবং সমতার কথা বলতে হবে জোড়ালো ভাষায়। সমাজকে জাগরিত করতে হলে আর কোন হীনমন্যতা নয়, আপোষ নয়। সময় এসেছে অন্যায়ের প্রতিবাদের, নির্যাতন মুক্ত সমাজ তথা রাষ্ট্র গড়ার, হোক তা শৈল্পিক ভঙ্গিতে লেখনীর মাধ্যমে বা রাজপথেঝাঁঝাঁলো শ্লোগানের প্রতিবাদে।

লেখক :- আফরোজা রিকা,
সভাপতি,
নারী মুক্তি সংসদ, ঠাকুরগাঁও, সম্পাদক, বোধন।





আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

ফুলবাড়িতে বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক : সীমান্ত হত্যার কড়া প্রতিবাদ ফুলবাড়িতে বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক : সীমান্ত হত্যার কড়া প্রতিবাদ
মাদকদ্রব্যের পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপনে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী মাদকদ্রব্যের পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপনে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী
ঠাকুরগাওয়ে নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস পালিত ঠাকুরগাওয়ে নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস পালিত
ঠাকুরগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস পালিত ঠাকুরগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস পালিত
আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে র‌্যালি ও আলোচনা সভা আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে র‌্যালি ও আলোচনা সভা
টাঙ্গন নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্রের সভা টাঙ্গন নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্রের সভা
ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনকে সংবর্ধনা ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনকে সংবর্ধনা
ঠাকুরগাঁওয়ে ছাত্রলীগ নেতার উদ্যোগে ছিন্নমূল শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ ঠাকুরগাঁওয়ে ছাত্রলীগ নেতার উদ্যোগে ছিন্নমূল শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ
ঠাকুরগাঁওয়ে লকডাউনের চতুর্থ দিনে ইউএনও-পুলিশের অভিযান : অর্থদন্ড ঠাকুরগাঁওয়ে লকডাউনের চতুর্থ দিনে ইউএনও-পুলিশের অভিযান : অর্থদন্ড
ঠাকুরগাঁওয়ে লকডাউনের তৃতীয় দিনে আইন-শৃঙ্খলা : জেল-অর্থদন্ড ঠাকুরগাঁওয়ে লকডাউনের তৃতীয় দিনে আইন-শৃঙ্খলা : জেল-অর্থদন্ড

আর্কাইভ