শুক্রবার ● ৪ আগস্ট ২০২৩
প্রচ্ছদ » অনুসন্ধানী » শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম : ভোরের সাথীর সদস্য সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে
শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম : ভোরের সাথীর সদস্য সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে
দেশায়ন ডেস্ক : ঠাকুরগাঁওয়ে শরীরের সুস্থতার জন্য নিয়মিত ব্যায়ম করছে “ভোরের সাথী” নামক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠে একত্রে হয়ে টিম আকারে শারীরিক নানা কসরতের মাধ্যমে ফিট থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। বিভিন্ন বয়সী মানুষজন নিজের শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের ব্যায়ামও করছেন। ২০১৪ সালে গুটি কয়েকজন মানুষ এই কাজটি শুরু করলেও বর্তমানে একটি বড় ধরনের সংগঠন গড়ে তুলেছেন তারা। পূর্বে ৫০-৬০ জন সদস্য থাকলেও ক্রমেই তা বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে ভোরের সাথী টিমের সদস্য সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক।
শুক্রবার সকালে বড় মাঠে গিয়ে দেখা যায় টিমের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যায়াম করছেন। প্রায় ৫০ জন সদস্য দলবেধে বিভিন্ন কসরতের মাধ্যমে ব্যয়াম চালিয়ে আসছেন। এদের মধ্যে একজন দীর্ঘ নি:শ^াস নিয়ে একটি ব্যায়াম করেন পরে সকলে তাকে অনুসরন করে সেই ব্যায়ামটি করে থাকেন। শুরুর দিকে সদস্য সংখ্যা কম থাকলেও ধীরে ধীরে সদস্য সংখ্যা বাড়ছে। এদের মধ্যে সরকারী-বেসরকারী চাকুরীজীবী, বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, এনজিও কর্মী, শিক্ষক, ব্যবসায়ি, চিকিৎসক, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষজন রয়েছে। সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে সাধারণ মানুষজন বিভিন্ন রোগে ভুগে থাকেন। সেই রোগ থেকে মুক্তির জন্য নিয়মিত ব্যায়ামটিকে বেছে নিয়েছেন তারা। ফলাফলও পাচ্ছেন। অনেকেই নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতাকে পিছনে ফেলে কিছুটা সুস্থতা বোধ করছেন।
ভোরের সাথীর সদস্য মো: রাশেদুজ্জামান মলয় বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত সকাল বেলা মাঠে আসি। নিয়মিত ব্যায়াম করি। আমাদের ব্যক্তিগত শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা থাকে, অনেকে নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে সুস্থ হয়ে উঠছেন। এখানে ৩০-৪০ টি ব্যায়াম করানো হয়। এই ব্যায়ামগুলি নিয়মিত করতে পারলে শরীরের অনেক উপকার হয়।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী বেলাল হোসেন বলেন, প্রতিদিন এখানে ব্যায়ামের ফলে আমার মত অনেকের শরীরের বিভিন্ন অসুস্থতা কমে আসছে। সকালে ব্যায়ামে যোগ দেওয়ার পর কখনও ঘন্টাখানিক কখনও দেড় ঘন্টা ব্যায়াম করার পর সারাদিন অনেক ভাল কাটে। ক্রমেই সদস্য সংখ্যা বাড়ছে। আমরা এই কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছি।
সংগঠনের সভাপতি ও সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, আমরা ১৪ সালে অল্প কিছু মানুষ নিয়ে এ সংগঠন গঠন করি। কিন্তু ধীরে ধীরে আমাদের সদস্য সংখ্যা বাড়তে থাকে। আমরা প্রতিদিন সকালে বড় মাঠে মিলিত হয়ে বিভিন্ন শারীরিক কসরতের ফলে শরীরকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করি। বিশেষ করে মধ্য ও বয়স্ক মানুষদের শরীরে নানা সমস্যা যেমন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস, বাত ব্যাথা, এজমায় আক্রান্ত। এখানে নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে উল্লেখিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সুফল পাচ্ছেন।
এ ব্যপারে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: নাঈম মিনহাজ কৌশিক বলেন, ভোরের সাথীর সদস্যদের নিয়মিত ব্যায়ামের বিষয়টি দেখেছি। এ জাতীয় ভাল কাজকে সকলে সাধুবাদ জানাবে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে তাদের ওই রোগের ঝুঁকি কমে যায়।
উল্লেখ্য, ৫-৭ জন নিয়ে “ভোরের সাথী” ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে সদস্য সংখ্যা দেড় শতাধিক। সংগঠনটি বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমুলক কাজের সাথেও জড়িত। এর মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ, চিকিৎসা সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক কাজ করে আসছে সংগঠনটি।