রবিবার ● ২ অক্টোবর ২০২২
প্রচ্ছদ » অনুসন্ধানী » ঠাকুরগাঁওয়ে সাফজয়ী সোহাগী-স্বপ্না’কে গণসংবর্ধনা
ঠাকুরগাঁওয়ে সাফজয়ী সোহাগী-স্বপ্না’কে গণসংবর্ধনা
দেশায়ন ডেস্ক :
সাফ নারী ফুটবল চাম্পিয়নশীপে ঠাকুরগাঁওয়ের কৃতী খেলোয়াড় সোহাগী কিসকু ও স্বপ্না রাণীকে ঠাকুরগাঁওবাসীর পক্ষ থেকে গণসংবর্ধনা প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন চত্বরে এ গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।
গণসংবর্ধনায় জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন,আ’লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাদেক কুরাইশী, পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান বাবু, জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রবীর কুমার গুপ্ত বুয়া,রাঙ্গাটুঙ্গি ইউনাইটেড ক্লাবের পরিচালক অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাব সভাপতি মনসুর আলী প্রমুখ।
আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপি বলেন, আমরা আজকে যাদের সংবধনা দিচ্ছি, তারা কিশোরী; তাদের বয়স কম। আগামীতে এই দুইজন আরো ভালো খেলবে। এ অনুষ্ঠানে প্রত্যাশা ব্যক্ত করি, ঠাকুরগাঁওয়ের অন্যান্য এলাকার কিশোরী-নারী খেলোয়াড়রা উৎসাহিত হবে এবং লেখা-পড়ার পাশাপাশি ক্রীড়া চর্চা অব্যহত রাখবে। জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী ফুটবল অনুশীলন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা রাখি। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিটি জেলায় আজকে কৃতী খেলোয়াড় সৃষ্টি হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, রাঙ্গাটুঙ্গি ইউনাইটেড ক্লাবের মেয়েদের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা আরো বেড়ে গেল। আজ থেকে নতুন করে কৃতী খেলোয়াড়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে। আমি তাদের নিজস্ব মাঠে টয়োলেটসহ আনুসাঙ্গিক অবকাঠামোর ব্যবস্থা নেব। এছাড়া সালন্দর হাই স্কুলের মেয়েদের কাছেও আমাদের অনেক প্রত্যাশা। আগামীতে তাদের থেকে ভালো কিছু আশা করি। তাদের চর্চা-অনুশীলন বৃদ্ধিতে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে। রাঙ্গাটুঙ্গি ক্লাবের অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম স্বপ্ন দেখেছেন এটা ঠিক কিন্তু মূল কারিগর সোহাগী, স্বপ্নাদের পেছনে রয়েছে তাদের কোচ বা মাঠে প্রত্যক্ষভাবে যারা প্রতিনিয়ত মেয়েদের পিছনে কাজ করেছেন। তাদেরও আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ ঠাকুরগাঁওয়ের এই অর্জনের পেছনে তাঁদের ভূমিকা রয়েছে। আজকে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ, সকল পেশাজীবীদের এই অংশগ্রহণ আমাদের উজ্জ্বীবীত করেছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, একজন সফল লেখকের উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে দু’জন কৃতী প্রকাশকের মাধ্যমে তারা হলেন ‘স্বপ্না ও সোহাগী’। সেই লেখক বিভিন্ন ভাবে তাঁর কলমের ব্যবহার করে এক সার্থক উপন্যাস সৃষ্টি করেছেন। আমি বেশ কিছুদিন আগেই এই স্বপ্নদ্রষ্টা অধ্যক্ষ তাজুল ইসলামের আহবানে রাণীশংকৈলে রাঙ্গাটুঙ্গির মেয়েদের খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। অবাক হয়েছি এই মেয়েদের ক্রীড়া নৈপূর্ণ অবলোকন করে। আজকে সেই মেয়েরাই তাজুল ইসলামের স্বপ্নকে সার্থক করে ঠাকুরগাঁওবাসীদের জন্য সাফল্যগাঁথা এনে দিয়েছে। আমি মন থেকে সেই লেখক এবং কৃতী খেলোয়াড়দের অভিবাদন জানাই। ঠাকুরগাঁও একটি সম্ভবনাময় অঞ্চল। এখানে ফুটবলের পাশাপাশি আরো অনেক খেলা রয়েছে। যদি আমরা সেদিকে নজর দেই তাহলে অনেক কৃতী মানুষকে আবিষ্কার করা সম্ভব। এছাড়া এখানকার সাহিত্য-সংস্কৃতি,কৃষ্টি-কালচারে হাজার বছরের ঐতিয্য মিশে আছে। তা এই জনপদের মানুষকে সমৃদ্ধ করেছে। এটা ইতিবাচক বিষয়।
আলোচনার এক পর্যায়ে সাফ জয়ী কৃতী খেলোয়াড় সোহাগী কিসকু, স্বপ্না রানী তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে। অনুষ্ঠানে ওই দুই খেলোয়াড়কে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার জাকির হোসেন ইমন।
এ সময় জেলা প্রশাসন, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক এবং ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয় খেলোয়াড়দেরকে। এর আগে পৌর শহরের রোড বালিয়াডাঙ্গী মোড় থেকে তাদের অভ্যর্থনা জানিয়ে গাড়িতে চড়িয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়।