বুধবার ● ১০ জুন ২০২০
প্রচ্ছদ » অর্থ ও বাণিজ্য » ঠাকুরগাঁওয়ে ঝড়-বৃষ্টিতে লিচু চাষিদের লোকসানের আশঙ্কা
ঠাকুরগাঁওয়ে ঝড়-বৃষ্টিতে লিচু চাষিদের লোকসানের আশঙ্কা
দেশায়ন ডেস্ক : মৌসুমি ফল বিশেষ করে আম, কাঠাল, লিচুর জন্য ঠাকুরগাঁও জেলার বেশ সুনাম রয়েছে। অন্যান্য জেলার লিচুতে পোকা ধরলেও এখানকার লিচুতে তা হয়না। মধুমাসের মিষ্টি ফল লিচু। এ সময় গাছে গাছে দোল খায় রঙ্গিন লিচু।
এ জেলার গোলাপি, চায়না থ্রি, বেদানা, বোম্বাই, কাঁঠালিসহ বিভিন্ন বাহারি নামের লিচুর কদর দেশজুড়ে। কিন্তু লিচু চাষিদের মতে, এ মৌসুমে লিচু পাকার আগ মুহূর্তে ঘনঘন বৃষ্টি ও ছোট-খাটো ঝড়ে বাগানের বেশিরভাগ লিচু, গাছ থেকে ঝরে গেছে। তাছাড়া টানা বৃষ্টিপাতের কারণে হরমোন কীটনাশক স্প্রে করা সম্ভব হয়নি।
একদিকে গাছ থেকে লিচু ঝরে পড়া, অন্যদিকে অসময়ে ফল পেকে যাওয়ায় লিচু চাষিরা পড়েছেন মহাবিপদে। বাগানে বাগানে অসময়ে লিচু পেকে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবার ভয়ে অধিকাংশ চাষি পাইকারদের কাছে অগ্রিম কম দাম নিয়ে বাগান বিক্রি করেন। এমন অবস্থায় শহরের মুন্সিরহাট এলাকার লিচু চাষি মাহবুব বাগানের ভাড়া, পরিচর্যাসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় উঠানো সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেন। তিনি জানান, বৃষ্টির কারণেও ফলের আকারও তেমন একটা বড় হয়নি। তাছাড়া আকর্ষণীয় রঙ না হওয়ায় বাজারে তেমন চাহিদা নেই। তাতে লাভের আশা তো দূরের। বাগান ভাড়া নিয়ে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী লোকসান গুনবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁও জেলায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ২ হাজার বাগানে লিচুর চাষ হয়েছে। আর লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৭ হাজার ১০০ টন। ফলন আশানুরূপ হলে লিচু বিক্রি করে এ জেলার চাষিরা প্রায় ২৫/৩০ কোটি টাকা আয় করতো। অথচ ফলন অর্ধেক কমে যাওয়ায় চাষিদের প্রায় ১৫ কোটি টাকার মত লোকসান হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন জানান, মৌসুমের এ পর্যায়ে ঘন ঘন বৃষ্টি হলেও ফলন খুব একটা খারাপ হয়নি। মাটির গুণাগুণের কারণে এখানকার লিচুতে পোকা না হওয়ায় আমাদের এসব লিচুর চাহিদা সর্বত্রই। এছাড়াও পরিবহন সংকট কেটে গেছে এবং বাজারে দাম ভাল উঠলে চাষিরা পূর্বের বছরের মত লাভবান হবেন বলে আশা করছি।