সোমবার ● ৮ জুলাই ২০১৯
প্রচ্ছদ » উন্নয়ন-সম্ভাবনা » ঠাকুরগাঁওয়ে ঘুষ ছাড়াই ৩৮ জন পুলিশ কনস্টেবলে চাকরি পেলেন
ঠাকুরগাঁওয়ে ঘুষ ছাড়াই ৩৮ জন পুলিশ কনস্টেবলে চাকরি পেলেন
দেশায়ন ডেস্ক :লাখ লাখ টাকা ঘুষ ও মামা-খালুর জোর থাকলেই পুলিশে চাকরি হয়। নাহলে সম্ভব হয়! এ কথা লোকমুখেই বেশ প্রচলিত। কিন্তু এবার ঠাকুরগাঁওয়ে তার ব্যতিক্রম হলো। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে মাত্র ১০৩ টাকা ব্যয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ কনস্টেবল পদে ৩৮ জন তরুণ-তরুণী চাকরি পেয়েছেন।
সারা দেশের মতো পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এবার ঠাকুরগাঁও থেকে নেওয়া হলো ৩৮ জনকে।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ বিভাগ জানায়, গত ২৬ জুন ঠাকুরগাঁও পুলিশ লাইনে প্রায় ৩ হাজার জন নারী-পুরুষ পুলিশ কনেস্টবল নিয়োগে যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রাথমিক শারীরিক পরীায় ৫০৩ জন নারী-পুরুষ উত্তীর্ণ হয়। এরপর ২ জুলাই লিখিত পরীায় ১৮৩ জন নারী-পুরুষ উত্তীর্ণ হয়। এরপর ৩ জুলাই চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সম্প‚র্ণ মেধার ভিত্তিতে ৩৮ জন নারী-পুরুষের নাম চুড়ান্ত করা হয় এবং এই ৩৮ জনকে পুলিশ কনেস্টবল পদে চাকরি দেয়া হয়।
পরে ওই দিনই পুলিশ লাইনে এক অনুষ্ঠানে সদ্য পুলিশ কনেস্টবলে চাকরিপ্রাপ্ত ১৯ জন নারী ও ১৯ জন পুরুষকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান মনির। এসময় পুলিশের অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও পুলিশের বিভাগের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারের সদস্যরা সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত কনেস্টবল পদে নারী-পুরুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের পরিবারের লোকজনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
এদিকেপুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের প্রায় এক মাস আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা, লিফলেটবিতরণ, মাইকিং এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যানার টাঙানো হয় ঠাকুরগাঁও পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে। এবার আর্থিক লেনদেনসহ সব অনিয়ম ও সুপারিশ পরিহার করে সুষ্ঠুভাবে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের বিষয়টি সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। বাড়ানো হয়েছিল গোয়েন্দা নজরদারিও।
১৯ জন নারীর মধ্যে সদর উপজেলার হরিনারায়নপুর গ্রামের দিনমজুরের মেয়ে রোজিনা আক্তার। বাবা রেজাউল করিম, পেশায় তিনি একজন দিনমজুর। অভাবের সংসারের হাল ধরার মতো কেউ নেই। বাবার পে এ সংসার চালানো দায়। ঠাকুরগাঁওয়ে ঘুষ ছাড়াই চাকরি হয়; এটা প্রমাণ করেছে পুলিশ বিভাগ। মানুষের মাঝে ফিরে এসেছে পুলিশের প্রতি আস্থা ও ভরসা। এজন্য পুলিশ বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের সর্বস্তরের মানুষ।
ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান মনির বলেন, চাকরি পাওয়া ছেলে মেয়েদের অভিব্যক্তি শুনে আমি বিমোহিত হয়েছি। যারা চাকরি পেয়েছে তাদের অধিকাংশই হতদরিদ্র কৃষক ও দিনমজুর পরিবারের সন্তান। প্রকৃত মেধাবিরাই সুযোগ পেয়েছে চাকরিতে।
তিনি বলেন, সরকারসহ পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিরা চাচ্ছেন পুলিশে স্বচ্ছতা ফিরে আসুক। সেই চাওয়া প‚রণেই ঠাকুরগাঁওয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখে শুধু মেধা এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতার ভিত্তিতেই এবারে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ধারা আগামীতেও অব্যাহত রাখতে চাই।